দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও তার প্রতিকার : রচনা (২০ পয়েন্ট)
উপস্থাপনা :
তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম । এদেশের শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি লোকের জীবনযাত্রার মান নিম্নমানের। কারণ তাদের আয় কম। এছাড়াও এদেশ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জনসংখ্যার ক্রমবৃদ্ধি ইত্যাদি সমস্যায় জর্জরিত। এমতাবস্থায় এদেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি জনসাধারণের জীবনকে করেছে দুর্বিষহ। কালোবাজারি, মুনাফাখোরি, মজুতদারি প্রভৃতি অসামাজিক কার্যকলাপ সামাজিক পরিস্থিতিকে করে তুলেছে বিপর্যস্ত।
দ্রব্যমূল্যের সাথে জীবনযাত্রার সম্পর্ক :
দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতার সাথে জীবনযাত্রার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। কারণ দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল থাকলে মানুষ তাদের সীমিত আয়ে পরিকল্পিতভাবে সাংসারিক ব্যয় পরিচালনা করতে সক্ষম হয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে এ সীমিত আয় দ্বারা সংসার পরিচালনা করা তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। যার ফলে অভাব নামক রাক্ষুসীর রাহুগ্রাসে নিপতিত হয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করে।
জনজীবনে পণ্যমূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া :
ক্রমাগত পণ্যমূল্যবৃদ্ধি জনজীবনে অসন্তোষের আগ্নেয়গিরি, ক্রোধের বজ্র ও বিদ্বেষের বিদ্যুৎ পুঞ্জীভূত করে। প্রতিনিয়ত বিধ্বংসী অভাব ও শোচনীয় দারিদ্র্যের কশাঘাতে মানুষ হয়ে ওঠে মরিয়া। সমাজ জীবনে বিক্ষোভের উত্তাপ ও উচ্ছৃঙ্খলার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ে। নিরুপায় মানুষ ধর্মঘট করে কখনও, আবার কখনও বা বেতন বৃদ্ধির জন্য আন্দোলনে নামে। কলকারখানা যানবাহন অফিস-আদালত এমনকি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত বন্ধ হয় এবং হয়তো বা শেষ পর্যন্ত বেতনও বাড়ে। কিন্তু আসল সমস্যার দুর্বার ও আগ্রাসী শক্তির সঙ্গে মোকাবিলা অসম্ভব। বেতন বাড়তে না বাড়তেই মূল্যমান এত বেশি উঁচুতে পৌঁছায় যে, সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিসটির আর নাগাল পায় না।