পল্লী উন্নয়ন - বাংলা রচনা class 6 , 7 , 8 , 9, 10
উপস্থাপনা ঃ
গ্রাম বা পল্লীই হচ্ছে আমাদের দেশের প্রাণ কেন্দ্র । আটষট্টি হাজার গ্রাম নিয়ে আমাদের বাংলাদেশ । পল্লীতেই দেশের শতকরা ৮৫ জন লোক বাস করে। পল্লী ব্যতীত কেবল শহরের উপর নির্ভর করে কোন জাতি বাঁচতে পারে না। তাই পল্লী উন্নয়নের উপরই এদেশের সার্বিক উন্নয়ন নির্ভর করে। পল্লী উন্নত হলেই দেশ উন্নত হবে।
পল্লীর পূর্বতন অবস্থা ঃ
একদা পল্লীর সুখ-সমৃদ্ধির কথা ধ্বনিত হত কবির কণ্ঠে কণ্ঠে। ধান, মাছ, তরিতরকারী, গবাদিপশু প্রভৃতি প্রয়োজনীয় কিছুরই অভাব ছিল না পল্লীর। পানিয় জলের জন্য বিরাট পুকুর-দীঘি খনন করা হত। কামার, কুমার, ধোপা, তাঁতী, চাষী সবাই আপন আপন ব্যবসা চালিয়ে পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে দিন কাটাত।
লবণ, মসলা, কেরোসিন প্রভৃতি দু- একটা দ্রব্য ব্যতীত শহর-বন্দর হতে নিত্য ব্যবহার্য আর কোন দ্রব্য কিনে আনার প্রয়োজন হত না । সে যুগে অন্ন বস্ত্রের জন্য হাহাকার করতে হত না ৷
পল্লীর বর্তমান অবস্থা :
পল্লীর সে সুখের দিন আজ আর নেই । অন্নের হাহাকার বস্ত্রের জন্য ক্রন্দন আজ নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। পল্লীর মাদ্রাসা, স্কুলগুলো উঠে যাওয়ার পথে – ছাত্র নেই, দরিদ্র পল্লীবাসীরা প্রয়োজনীয় বেতন দিয়ে ছেলে মেয়ে পড়ানোর শক্তি রাখে না ।
মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। যে পল্লী গ্রাম আগে ছিল স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য, সচ্ছলতা ও আনন্দের আগার, তা আজ কলহ, দৈন্য, রোগ শোকের স্থায়ী আবাস হয়ে উঠেছে ।
গ্রামের শিক্ষিত যুবকেরা চাকরির আশায় শহরে ভিড় জমাচ্ছে। ঋণের দায়ে মহাজনের কাছে হালের বলদ, জমি-জমা ইত্যাদি বন্ধক দিয়ে গ্রামের অধিকাংশ কৃষককূল আজ শহরে যেয়ে শ্রমিক সেজেছে।
পল্লী সংস্কারের উপায় ঃ
এ শোচনীয় অবস্থার পরিবর্তন করে পল্লীকে বাঁচাতে হলে কি কি উপায় অবলম্বন করতে হবে তা সহজে বোঝা যায়। পল্লী সংস্কারের উপযোগী একথা আমরা সকলেই জানি। পল্লীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হলে তাকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে হবে। আত্মনির্ভরশীল হতে হলে যে উপকরণের দরকার তা সহজলভ্য করে তুলতে হবে ।