অপিনিহিতি,অভিশ্রুতি,সমীভবন ও স্বরসঙ্গতি কাকে বলে?উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা
অপিনিহিতি : শব্দস্থিত ব্যঞ্জনবর্ণের পরবর্তী ই-কার বা উ-কার যথাস্থানে উচ্চারণ না করে ব্যঞ্জনবর্ণের পূর্বেই উচ্চারণ করার রীতিকে অপিনিহিতি (Apenthesis) বলে। যেমন — আজই-আইজ; কালই-কাইল; আশু-আউশ; সাধু-সাউধ।
👉অপিনিহিতির ফলে য-ফলা যুক্ত য-ফলার লুপ্ত ই-ধ্বনির প্রকাশ পায়; যেমন — কাব্য-কাইবব; কার্য-কাইরয; সত্য সইত্ত বাংলা ভাষায় ‘ইয়া, প্রত্যয়ান্ত সমাপিকা ক্রিয়া এবং ‘ওয়া’ প্রত্যয়ান্ত শব্দের পরও অপিনিহিতির প্রভাব পরিলক্ষিত হয়; যেমন — রাখিয়া-রাইখ্যা বা রাইখা, দেখিয়া-দেইখ্যা বা দেইখা; মাছুয়া-মাউছা; গাছুয়া-গাউছা; পড়ুয়া-পউড়া ইত্যাদি ।
অভিশ্রুতি : অপিনিহিতিজাত ই-কার বা উ-কার পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সাথে মিশে গেলে অথবা নিজে নিজে লুপ্ত হলে এর রূপের যে পরিবর্তন ঘটে, তাকে অভিশ্রুতি বলে। যেমন —
করিয়া > কইরা > করে; মরিয়া > মাইরা > মেরে;
বলিব > বইলৰ . বলব; করিব> কইরব> করব;
রাখিও> রাইখো>রেখো; ধরিলে> ধইরলে > ধরলে;
জালুয়া > জাউলুয়া > জেলে; মাছুয়া > মাউছুয়া > মেছো।
👉অনুরূপ একই শব্দে দুটি স্বরধ্বনি পাশাপাশি বসলে কখনও একটি স্বরের লোপ হয়, আবার কখনও দুটি স্বরধ্বনি মিলে এক স্বরে পরিণত হয় । এরূপ রীতিকেও অভিশ্রুতি বলে, যেমন মাইয়া-মেয়ে; গাইয়া-গেঁয়ো; বইন-বোন; রইব-রব; কইব-কব।