November 20, 2023

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস - রচনা ২০পয়েন্ট 

ভূমিকা: -

একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে একটি স্মরণীয় ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এটি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের রক্তে রাঙা একটি ঐতিহাসিক দিন। মাতৃভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্যে যাঁরা শহিদ হয়েছেন তাদের রক্তে রাঙা এ দিন।

আমরা সেই বীর ভাষাশহিদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা সকল শহিদদেরকে সারাজীবন কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করব। একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটির তাৎপর্য স্বদেশের প্রাঙ্গণ ছাড়িয়ে, বিশ্বসভায় পরিচিতি লাভ করেছে এবং এ দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

তাৎপর্য:

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার্থে বাংলাদেশের তরুণদের আত্মদান ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। পৃথিবীর বুকে বাংলাই একমাত্র ভাষা যার জন্যে অসংখ্য মানুষের রক্ত ঝরেছে। তাই এ ঐতিহাসিক দিনটি স্বাধীন বাংলাদেশের গৌরবের বিষয়।

১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট অবিভক্ত ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তানের ছিল দুটি অংশ। একটি পশ্চিম পাকিস্তান অপরটি পূর্ব পাকিস্তান। এ পূর্ব পাকিস্তানই বর্তমান স্বাধীন বাংলাদেশ। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকরা আমাদের ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।

১৯৪৮ সালের ২১শে মার্চ পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এক জনসভায় ঘোষণা করেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। একথা শুনে বাংলার দামাল ছেলেরা সাথে সাথেই এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। আবার ১৯৫২ সালের ৩০শে জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাজিমউদ্দীনও এক জনসভায় দাম্ভিকতার সঙ্গে একই ঘোষণা দেন।

প্রতিবাদে ছাত্ররা ধর্মঘট পালন করে। তারা ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। পুলিশ নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর বন্দুক, বেয়নেট, টিয়ারগ্যাস আর লাঠিসোটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল। এতে সালাম, বরকত, জব্বার, রফিকসহ নাম না জানা অনেকে শহিদ হলেন। বিনিময়ে রক্ষা পেল মাতৃভাষা ।

জাতীয় জীবনে একুশের তাৎপর্য ঃ

একুশ বাঙালী জাতিকে দিয়েছে মুক্তির ইশারা। একুশ প্রতিষ্ঠিত করেছে বাঙলা ভাষাকে। ঐক্য এনে দিয়েছে বাঙালি সমাজ, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং রাজনীতি। তাই একুশ একটি তাৎপর্যপূর্ণ জাতীয় চেতনার দিন।


ঘটনার সূত্রপাত :

১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তান গণপরিষদে প্রস্তাব উত্থাপিত হল গণপরিষদে বক্তৃতা করতে হবে ইংরেজি এবং উর্দূতে । এর প্রতিবাদ করল পূর্ববাংলার কিছু সংখ্যক সদস্য। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিল বাঙলা ভাষায় বক্তৃতা করতে দিতে হবে। যেহেতু পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৬৩ ভাগের মাতৃভাষা বাংলা।

ছাত্র আন্দোলনের সূত্রপাত :

১৯৪৮ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এক জনসভায় দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করলেন উর্দু হবে ) পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা । তখন পূর্ব পাকিস্তানের সাড়ে চার কোটি মানুষের সম্মুখে মাতৃভাষা প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে ঝুলে রইল। এর ফলশ্রুতিতে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ছাত্র আন্দোলনে আরো গণজাগরণ দেখা দিল ।

Read more