March 4, 2022

ইসলামের মধ্যে দলসমুহ

ইবাদি: ইবাদী হল ইসলাম ধর্মাবলম্বীএক মাযহাব। এই মাযহাব সুন্নি বা শিয়া পন্থার অন্তর্ভুক্ত নয়। এই মাযহাবের আবির্ভাব ইবাদী আন্দোলন থেকে। এই আন্দোলন মুহাম্মাদের প্রয়াণের ২০ বছর পর শুরু হয় বলা হয়ে থাকে। আব্দুল্লাহ ইবন ইবাদ আল-তামিমি এই মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা মনে করা হয়। কিন্তু এই মাযহাববাদীরা দাবী করেন এর প্রতিষ্টাতা জাবির ইবন জাইদ আল-আযদি। খারাজীদের প্রভাব এই মতবাদের উপর আছে বলে মনে করা হয়।ইবাদি অনুসারীরা নিজেদেরকে "মুসলমান" বা "সরলতার লোক" বলে উল্লেখ করেন।

খারিজি: খারিজি শব্দ দ্বারা ইসলামের প্রথম যুগে উদ্ভব হওয়া একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে বুঝায়। ৭ম শতাব্দীতে এই গোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছিল। ইরাকের দক্ষিণ অংশে তারা কেন্দ্রীভূত হয়। সুন্নি ও শিয়াদের থেকে খারিজিরা ভিন্ন মত পোষণ করত। পরবর্তীতে সময়ের সাথে সাথে খারিজিরা সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়। খলিফা আলি ইবনে আবি তালিবের শাসন শুরু হওয়ার পর তারা প্রথমে তা মেনে নেয়, তবে পরে তার শাসন প্রত্যাখ্যান করে।

যায়িদী :উসামা ইবনে যায়িদ কে যায়িদী ধরা হয়

ইসমাইলি :শিয়াদের প্রধান দু'টি শাখার একটি বার ইমামে ও অপরটি সাত ইমামে বিশ্বাসী।সাত ইমামে বিশ্বাসীদের সপ্তম ইমাম হলেন ৬ষ্ঠ ইমাম জাফর আস সাদিকের বড় ছেলে ইসমাইল যাকে তিনি প্রথমে ইমাম হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন।কিন্তু পরবর্তিতে তাঁর মৃত্যুর পর বাবা ২য় ছেলে ইসমাইলের ছোট ভাই মুসাকে ইমাম মনোনয়ন দেন।সপ্তম ইমাম মুসাকে ইমাম হিসেবে যারা মেনে নিয়ে পরবর্তী ১২তম ইমামকে ইমাম মাহদি হিসেবে শেষ ইমাম মেনে চলেন তারা দ্বাদশ ইমামে বিশ্বাসী শিয়া।আর যারা ইসমাইলকে গায়েব হয়ে আছেন, যে কোন সময় তিনি পাপপূর্ণ সমাজ সংস্কারের জন্য জগতে ইমাম মাহদি রূপে হাজির হবেন এবং মুসা নয়,বরং তিনিই একমাত্র বৈধ ইমাম বলে বিশ্বাস করেন তারাই ইসমাইলীয় শিয়া।

হানাফি: হানাফি হল সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি মাযহাব। এই মাযহাব অবলম্বী মানুষেরা ইমাম আবু হানিফার অনুসারী।

সালাফি : সুন্নি ইসলামের অন্তর্ভুক্ত একটি আন্দোলন

আলারাইট নামের কোনো কিছু আমি খুজে পাইনি

মুতাজিলা : মুতাজিলা হল ইসলামি ধর্মতত্ত্বের একটি শাখা। এটি কারণ ও যুক্তি আলোচনার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। ৮ম থেকে ১০ শতাব্দীতে বসরা ও বাগদাদে এর প্রাধান্য ছিল। কুরআনকে আল্লাহর সৃষ্ট বলার কারণে তারা বেশি আলোচিত। তাদের মতে কুরআন আল্লাহর সাথে একই অস্তিত্বে ছিল না বরং তা আল্লাহর সৃষ্ট।

হানবলি:হাম্বেলি বা হানবলি হল সুন্নি সম্প্রদায়ভুক্ত এক মাযহাব। এই মাযহাবপন্থীরা ইমাম হানবলের অনুগামী।

আশআরি:আশ'আরী ইসলামের বিশ্বাসগত একটি মতবাদ। ইমাম আবু হাসান আশআরী, একজন ইসলামী আক্বিদার ব্যাখ্যাকারক, মুতাযিলাদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছেন। তার লেখা থেকে এই মতবাদের জন্ম হয়।

আহমাদিয়া ও কাদিয়ানি :আহমদীয়া; পূর্ণরূপে আহমদীয়া মুসলিম জামাত তর্কসাপেক্ষে মুসলিম ধর্মীয় পুনর্জাগরণ অথবা মসিহবাদী আন্দোলন যার উদ্ভব হয়েছিল ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ব্রিটিশ ভারতের কাদিয়ান এলাকার মির্যা গোলাম আহমদের জীবন ও শিক্ষার ভিত্তিতে। এটি কাদিয়ানী আন্দোলন নামেও পরিচিত। মির্যা গোলাম আহমদ (১৮৩৫-১৯০৮) দাবী করেছিলেন যে আল্লাহ তাকে আখেরী জমানায় প্রতিশ্রুত ও মুসলমানদের প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী ও প্রত্যাবর্তনকারী মসীহ (যীশু বা ঈসা) উভয় হিসেবেই প্রেরণ করেছেন ইসলামের শেষ বিজয় শান্তিপূর্ণভাবে সংঘটিত করতে এবং অন্যান্য ধর্মীয় মতবাদের প্রতীক্ষিত পরকালতাত্ত্বিক ব্যক্তিত্বদের মূর্ত করতে। নবী মোহাম্মদের বিকল্প নাম 'আহমদ' থেকে এই আন্দোলন ও সদস্যগণ ('আহমদী মুসলিম' বা সংক্ষেপে 'আহমদী') নিজেদের নামকরণ করলেও সাধারণভাবে মুসলিম বিশ্বে তাদের প্রতিষ্ঠাতার জন্মগ্রহণকারী অঞ্চলের নাম কাদিয়ান এর নামে কাদিয়ানী হিসেবেই আখ্যায়িত করা হয়।আহমদীরা বিশ্বাস করে যে মির্যা গোলাম আহমদ ইসলামকে তার আসল প্রথমযুগীয় অবস্থায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী কেতাবে উল্লেখিত যীশু বা ঈসার গুণবিশিষ্ট ইমাম মাহদী হয়ে এসেছেন ইসলামকে পুনরুজ্জীবিত করতে ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে এর নৈতিক ব্যবস্থা চলমান করতে। তারা আরও বিশ্বাস করে যে মির্যা গোলাম আহমদ ইসলামের শেষ নবী মোহাম্মদের প্রদর্শিত পথে পাঠানো একজন “উম্মতী নবী”। তাদের মতে নবুয়াত খাতামান্নাবিঈন এর অর্থ নবুয়াত এর সমাপ্তি নয় বরং খাতামান্নাবিঈন মানে "নবীগনের মোহর" বা নবীগনের সত্যায়নকারী। তাদের মতে নবী মোহাম্মদ এর প্রকৃত অনুসরনে নতুন নবী আসতে পারবেন তবে তিনি হবেন ‘উম্মতী নবী’ ও তিনি কোনো নতুন শরীয়ত আনবেন না।সুন্নীদের মতে, এই ‘উম্মতী নবীর’ ধারণা কুরআন ও হাদীস দ্বারা সমর্থিত নয় এবং তারা তাদেরকে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত মানে না।আহমদীয়াদের মতে যেহেতু তারা কালিমা তৈয়বা ‘লা ইলাহা ইলাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ মনে প্রাণে বিশ্বাস করে বলে তাদের ‘অমুসলিম’ ঘোষণা করার অধিকার কারো নেই। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের কার্যক্রম ক্রমবর্ধমান। পৃথিবীর ২১৩ দেশে আহমদীয়াদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই সংগঠনের সদরদপ্তর লন্ডনে অবস্থিত। গোলাম আহমদের মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা খিলাফত প্রবর্তন করে এবং তাদের নির্বাচিত ৫ম খলিফা মির্যা মাসরুর আহমেদ লন্ডন থেকে এই সংগঠনের কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। আহমদী বিশ্বাস ও কর্মকাণ্ডকে ‘আহ্‌মদীয়াত’ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।

ওয়াহাবি:ওয়াহাবী আন্দোলন হচ্ছে ধর্মীয় আন্দোলন বা ইসলামের একটি শাখাগোষ্ঠী যা অর্থোডক্স, অতিচরমপন্থী," অস্টেরে, মৌলবাদী, বিশুদ্ধবাদী,"একেশ্বরবাদীর উপাসনার জন্য ইসলামী পূনর্জাগরণ, চরমপন্থী আন্দোলন ইত্যাদি নামে পরিচিত।

আহলে হাদিস:আহলে হাদীস বা আহল-ই-হাদীস বা আসহাবুল হাদীস এর শাব্দিক অর্থ হল হাদীস বিশেষজ্ঞ। পারিভাষিক অর্থ, যারা হাদীস সংরক্ষণ করেছেন এবং গবেষণা করেছেন। হাদীসের শাব্দিক অর্থ হল বাণী। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তা'আলা নিজেই কুরআনকে হাদীস বলে সম্বোধন করেছেন। অর্থাৎ হাদীস বলতে সম্মিলিতভাবে কুরআন ও সুন্নাহ উভয়টিই বোঝায়। আর যারা কুরআন ও সুন্নাহ তথা হাদিসের নিরপেক্ষ অনুসারী, তাদেরকে বলা হয় আহলে হাদীস।

বেরলভি :বেরলভী বা রেজভী (English: Barelvi) হল দক্ষিণ এশিয়ায় ২০ কোটির বেশি অনুসারীদের সুন্নি হানাফি মাযহাবের একটি আন্দোলন। ভারতের উত্তর প্রদেশের বেরেলি জেলার শহর বেরেলি থেকে এর সূচনা হয় তাই ভারতে এবং পাকিস্তানে বেরলভী বা ব্রেলভী নামে পরিচিত। কিন্তু বাংলাদেশে এরা রেজভী নামে বেশি পরিচিত, এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নেতা আহমেদ রেজা খান বেরলভী (১৮৫৬-১৯২১)।

দেওবন্দি:হল সুন্নি ইসলাম কেন্দ্রিক একটি পুনর্জাগরণবাদী আন্দোলন। এর কেন্দ্র প্রাথমিকভাবে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ। বর্তমানে যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকাতেও এর বিস্তার ঘটেছে। নামটি ভারতের দেওবন্দ নামক স্থান থেকে এসেছে। এখানে দারুল উলুম দেওবন্দ নামক মাদ্রাসা অবস্থিত। এই আন্দোলন পন্ডিত শাহ ওয়ালিউল্লাহ (১৭০৩-১৭৬২) দ্বারা অনুপ্রাণিত। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ব্যর্থ সিপাহীবিদ্রোহের এক দশক পর ১৮৬৬ সালের ৩০ মে দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই আন্দোলনের সূচনা হয়।

দ্রুজ:একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম এবং সামাজিক সম্প্রদায়।দ্রুজদের আবাসভূমি সিরিয়া, লেবানন। ইসরাইল, এবং জর্ডান│জর্ডানে। দ্রুজ ধর্মকে আলাদা ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় না। কারণ এই ধর্মের ভিত্তিমূল ইসলাম। দ্রুজ ধর্ম মূলত শিয়া ইসলামের একটি শাখা। দ্রুজদের ধর্ম বিধানে ইব্রাহিমীর ধর্মসমূহের পাশাপাশি নিওপ্লাতিনিক এবং পিথাগোরীয় মতবাদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। দ্রুজগণ নিজেদেরকে “আহলে তাওহীদ” (একেশ্ববাদী মানুষ বা একতাবদ্ধ মানুষ) অথবা “আল মুয়াহিদুন” বলে পরিচয় দেয়। লেভান্ত বিশেষ করে লেবাননের ইতিহাস গঠনে দ্রুজদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুজদের সামাজিক রীতিনীতি মুসলমান এবং খ্রিস্টানদের থেকে ভিন্ন।

সুফিবাদ :সুফিবাদ বা তাসাউফ যাকে বিভিন্নভাবে ইসলামী আধ্যাত্মবাদ, ইসলামের অন্তর্নিহিত রূপ, ইসলামের অন্তর্গত আধ্যাত্মিকতার অদৃশ্য অনুভূতি হিসেবেও সংজ্ঞায়িত করা হয়, তা হল ইসলামে আধ্যাত্মবাদ, যা নির্দিষ্ট মুল্যবোধ, আচার-প্রথা চর্চা, মূলনীতি দ্বারা বিশেষায়িত, যা ইসলামের ইতিহাসের খুব প্রাথমিক দিকে শুরু হয়েছিল, এবং এটি ইসলামের আধ্যাত্মিক চর্চার "প্রধান অভিব্যক্তি ও কেন্দ্রীয় স্বচ্ছতা"কে তুলে ধরে। সুফিবাদের চর্চাকারীদের "সুফি" বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে

তাবলিগ জামাত: একটি ইসলাম ধর্মভিত্তিক সংগঠন যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা। সাধারণত মানুষকে আখিরাত, ঈমান, আমল-এর কথা বলে তিনদিনের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়। এর পর যথাক্রমে সাতদিন ও চল্লিশদিন-এর জন্য আল্লাহর রাস্তায় দাওয়াত-এর কাজে উদ্বুদ্ধ করা হয়ে থাকে। তাবলিগ জামাত-এর মুল ভিত্তি হিসেবে ধরা হয় ৬টি উসুল বা মূলনীতিকে। এগুলো হলো: কালিমা, নামায, ইলম ও যিকির, একরামুল মুসলিমিন বা মুসলমানদের সহায়তা করা, সহিহ নিয়ত বা বিশুদ্ধ মনোবাঞ্ছা, এবং তাবলিগ বা ইসলামের দাওয়াত।

শাফিঈ:মাযহাব হল সুন্নি ইসলামের অন্যতম মাজহাব। মুসলিম আইনবিদ ইমাম শাফিঈ থেকে এই মাজহাবের উদ্ভব হয়।

source :Wikipedia

ইসলাম আদিযুগ থেকে মানুষ নানা প্রথা ব্যবহার করেছে কিন্তু সকল নবী রাসূলগণ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে শেষ নবী ও রাসূল হিসেবে গন্য করেছে

ইসলামের মূল বিষয় হচ্ছে কোরআন এবং হাদিস কে জীবনে চলার পথ হিসেবে ধরা এবং তার অনুসারে চলা